প্রতিটি কাজে আমাদের খুব বেশি সতর্ক থাকা উচিত;বিশেষত যদি এমন কোনো বিষয় হয়, যা,স্বভাবতই নাযুক!যাতে করে একচেটিয়া মুসলিমবিদ্ধেষী'রা ইসলামের কোনো "শিয়ার" নিয়ে কটুকথা বলার সুযোগ না পায়!কিন্তু, আমরা অনেকসময়ি বড় অসচেতনতার পরিচয় দেই;ফলে গোঁড়াপন্থি নাস্তিক'রা নিজেদের 'লাগাম'খুলে ইসলামকে অবমাননা করার প্রয়াস পায়!এটা নিতান্তই দুঃখের এবং পরিতাপের।সুতরাং প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের এ্যালাট থাকা অপরিহার্য!
রাতকে আল্লাহতায়ালা মানুষের আরামের জন্য সৃষ্টি করেছেন।তাই,রাত মানুষের আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকে।দিনের ব্যস্তময় সময়ের ইতি টেনে মানুষ রাতকে বিশ্রামের উপকরণ হিশেবে গ্রহণ করে। এতে যেমন মানুষ নিদ্রামগ্ন হয়;তেমনি সময়টা একান্ত আল্লাহর সাথে নিবিড়ভাবে মেলার সময়ও বটে!বিশেষত, 'শেষ রাতের সময়টা';যখন স্রষ্টার পক্ষ থেকে সৃষ্টির প্রতি মুহুর্মুহু রহমত রর্ষিত হয়।বান্দা রবের সাথে নিবিষ্টচিত্তে মিলিত হয়!
কিন্তু রমজানের রাত্রিগুলোয় ভিন্ন আরেকটি গুরুদায়িত্ব পালনার্থে আমাদের রাতে জাগতে হয়;জাগাতে হয়।সাহরির মত গুরুত্বপূর্ণ বিধান পালনার্থে;সর্বোপরি আমাদের সুস্থতার বিবেচনায় রাতের খাবার গ্রহণার্থে ওঠতে হয়।
এজন্য মসজিদে এলান করা এবং মানুষকে জাগানোর জন্য মসজিদের মাইকে ঘোষণা করা প্রাচীনরীতি।এবং মানুষের কল্যাণার্থে শেষ রাতে জাগতে হয় এবং জাগতে সাহায্য করতে হয়। এজন্য সাহরির মত বিধান পালন সহজার্থে মাইকে এলান করা হয়।
তবে,লক্ষণীয় হলো,এটা যেনো মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়!
রমজান মাস মুসলমানদের 'সিয়ামের মত গুরুত্বপূর্ণ বিধান পালনের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে।কিন্তু, আমাদের বসবাস সব ধর্মের মানুষকে কেন্দ্র করে। এখানে যেমন মুসলমান রয়েছে;আছে হিন্দু,বৌদ্ধসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী হাজারো মানুষ। তাই,তাদের বিষয়টাকেও আমাদের বিবেচনায় রাখা একান্ত কর্তব্য। যাতে আমাদের কোনো বিধান পালন অন্যের কষ্টের কারণ না হয়ে যায়!
আমি দেখেছি,গ্রাম্য অঞ্চলগুলোতে মাঝরাত থেকে ডাকা শুরু হয়;এতটুকুতেই যদি সীমাবদ্ধ থাকতো,ভালো ছিলো।দুঃখের ব্যাপার হলো,আমরা এতটাই অসচেতন যে, একটা ভালো কাজ করতে গিয়ে অন্যান্য মন্দকাজে জড়িয়ে যাচ্ছি!কারণ,মাইকে এমন সব উদ্ভট কাজ করা হয়, যেটা নিতান্তই পরিতাজ্য এবং পরিতাপের।আমাদের ঘুম থেকে ডাকার ফলে যেনো অন্য অনেকের ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটে;কারো ইবাদাতে বিঘ্নতার সৃষ্টি না হয়,এদিকে আমাদের খুব লক্ষ্য রাখতে হবে।
গতবছর রোযার শুরুতে নাস্তিকদের গুরু 'তসলিমা নাসরিন'এর একটা পোস্ট ছিলো এমন, যার সারবত্তা হলো,রোযা মানুষকে কষ্টে ফেলে! কারণ,শেষ রাতে যেভাবে মাইকে ডাকাডাকি করা হয়;এতে মানুষের ঘুমের ব্যত্যয় ঘটায়!যদি,তার কথাকে গ্রাহ্য করা নাও হয়; তবুও এটা তো অবশ্যি অনস্বীকার্য যে,ইসলাম কখনো মানুষের কষ্টকে বরদাশত করে না!একজনের ইবাদাতের কারণে অন্যের কষ্ট হবে,এটা ইসলাম বলে না!বরং ইসলাম বলে,যে ইবাদাতে অন্যের কষ্ট হয় বা কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, এমন কাজ থেকে বিরত থাকা! এটাই ইসলামের শিক্ষা।
তাই,আমাদের আরো বেশি সতর্ক হতে হবে। বিশেষত,যারা মসজিদের দায়িত্বে নিয়োজিত আছি;জাতির সেবায় মগ্ন রয়েছি।আমাদের প্রতিটি কথা এবং কাজ হবে পরিমিত; যাতে মানুষের কষ্টের লেশমাত্র থাকবে না! ভোররাতে জাগানোর ক্ষেত্রে মানুষের ঘুম ভাঙে,এতটুকু কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবো।অযথা,গজল গাওয়া,তেলাওয়াত করা,শের পাঠ করা ইত্যাদি কার্যাদি থেকে বিরত থাকবো।সৌন্দর্যমণ্ডিত ইসলামকে মানুষের সামনে আরও বেশি সুন্দর এবং মোহানীয় ও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করবো।সর্বপরি,যাতে ইসলামবিদ্ধেষী নাস্তিক্যমনা'রা ইসলাম এবং আমাদের কার্যকলাপ নিয়ে কথা বলা; লেখালেখি করার প্রয়াস না পায়;আমরা সেদিকে সচেতনদৃষ্টি রাখবো।ইসলাম আমাদের যে সৌন্দর্য শিক্ষা দেয় এটাকে মানুষের সামনে তুলে ধরবো।
সাঈদ বিন ইদ্রিস
০২/০৫/২০২০
No comments:
Post a Comment