"কাশ্মীর সহ বিশ্বের সকল প্রান্তে মুসলমানরা যখন নির্যাতিত তখন আমার সকল কাজ,কর্ম আগের মতই চলছে।নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করি আমি কি মুসলমান? মুফতি শরীফুল ইসলাম
অনলাইন বাংলা মাদরাসা:-পবিত্র,মহামান্বিত মাস, "জিলহজ্ব" যখন মুসলমানের অন্য তম এবাদত হজ্ব এর মৌসুম চলছে, ঠিক সেই মুহুর্তে "কাশ্মীর" স্বাধীন একটি মুসলিম রাষ্ট্র, মুসলমানদের স্বাধীনতাকে কেড়ে নিয়ে নিয়েছে ভারত সরকার। এমত অবস্থায় মুসলমান হয়ে আমরা আমাদের হক আদায় করতে পারছি না তাহলে আমরা কোন পর্যায়ের মুসলমান, ঈমানদার হলাম।
“হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, প্রত্যেক মুসলমান অন্য মুসলমানের ভাই। (সহিহ মুসলিম শরীফে)।
"অন্য হাদীসে রাসুল সা. ইরশাদ করেন:- এক মুসলমান অন্য মুসলমান একই দেহের মত,যখন তার কোন এক অঙ্গ ব্যথা করে তখন তার পুরা দেহের সকল অঙ্গ ব্যথিত হয়ে যায়।
উক্ত দুই হাদীস সম্পর্কে মুহাদ্দীসে কিরাম বলেন:- এক মুসলমান অন্য মুসলমানের সাথে কি রকম সম্পর্ক হবে তা বুঝানো।
অর্থা্ৎ পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে যদি কোন মুসলমান নির্যাতিত হন অন্য প্রান্তের মুসলমান যখন তা শুনবে তখন সে সেখান থেকেই ব্যথিত হবে, কেননা তারা তো ভাই,ভাই।তারা তো সবাই একটি দেহের সমতুল্য।
ফলে এক ভাই জুলুমের সম্মুখীন হলো যেমনি ভাবে অন্য ভাই বসে থাকতে পারে না। তদরুপ এক অঙ্গ ব্যথিত হলে যেমন অন্য অঙ্গ ব্যথিত না হয়ে থাকতে পারে না।
তদরুপ এক মুসলমান যখন নির্যাতিত হবে তখন অন্য মুসলমাও চুপ করে থাকতে পারে না।
এই সব হাদীস দ্বারা রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক মুসলমানকে অপর মুসলমানের ভাই সাব্যস্ত করে তার কিছু সামাজিক আচার-আচরণ এবং হক-অধিকারের কথা স্বরন করিয়ে দিয়েছেন। আর তা হল (১) এক মুসলমান অন্য মুসলমানের উপর কোনো ধরনের জুলুম-অন্যায় করতে পারবে না যেমনি ভাবে এক ভাই অন্য ভাই কে জুলুম করতে পারে না। এই নির্দেশে জুলুম যত ধরনের আছে তার সবই অন্তর্ভুক্ত। তথা দৈহিক হোক, মাল-সম্পদের হোক, মুখ ও কথার হোক কিংবা তা নফসের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের জুলুম হোক। মোট কথা যেমনিভাবে কোনো মুসলমানকে অন্যায়ভাবে দৈহিক কষ্ট দেয়া এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হারাম, ঠিক একইভাবে অপমানিত-লাঞ্ছিত করা নাজায়েজ।
(২) নিজ অপর ভাইয়ের ওপর জুলুম করা হারাম। একইভাবে এই বিষয়টিও কোনো মুসলমানের চরিত্র-আদর্শ হতে পারে না যে, কারও ওপর অন্যায়-জুলুম হচ্ছে আর সে তা চেয়ে চেয়ে দেখছে। সাহায্য করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সে মজলুমের সাহায্যে এগিয়ে আসছে না।
তাদের সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন : কোনো মুসলমান অপর কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে যদি সাহায্যকারী ও বন্ধুহীন ছেড়ে দেয় যেখানে তার অসম্মান হচ্ছে, তার ইজ্জত-সম্মানের ওপর হামলা-আক্রমণ হচ্ছে—তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাকে এমন স্থানে বন্ধুহীন সাহায্যকারী ছাড়া ছেড়ে দেবেন, যেখানে সে নিজের জন্য সাহায্যকারীর প্রত্যাশী হয়।’ (আবু দাউদ শরীফ)।
@@ হাদিসের আলোকে এখন আমি / আমরা নিজের জীবনকে তুলনা করি :- আজ বিশ্বের সকল প্রান্তে মুসলমানরা নির্যাতিত, মাজলুমানের শিকার হচ্ছে এমত অবস্থায় আমি মুসলমান হয়ে, অপর মুসলমানের ভাই হয়ে কতটুকু সাহায্য করতে পারছি। মায়ানমার, হায়দ্রাবাদ, ভারত, ইরাক, ইরান, বাংলাদেশ, ফিলিস্তিন, বিশেষ করে বর্তমান কাশ্মীরে মুসলমানদের উপর যে নির্যাতন করা হচ্ছে এর প্রতিবাদে আমরা কতটুকু এগিয়ে আসতে পারলাম, অথচ রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে অপর মুসলমানের ভাই সাব্যস্ত করেছেন, অঙ্গ সাব্যস্ত করেছেন।
*** যা হোক এবার আমরা হাদিসের আলোকে জেনে নেইঃ ঈমানদারদের মাঝে আমাদের কত নম্বর স্থর।
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, তোমাদের সামনে যখন ইসলামবিরোধী কাজ হতে দেখবে তখন হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে। যদি এতে অক্ষম হও তবে মুখ দিয়ে প্রতিবাদ জানাবে। যদি তাতে অক্ষম হও তবে অন্তর দিয়ে তাকে ঘৃণা করবে, তবে এটি দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক।” (সহীহ মুসলিম)
অর্থাৎ এখন যদি আমরা হাত দ্বারা এর প্রতিশোধ না নিতে পারি, তাহলে অন্ততপক্ষে আমাদের উচিত মুখ দিয়ে জবান দিয়ে তথা তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলে এর প্রতিশোধ গ্রহণ করা, তাও যদি না পারি তাহলে আমাদের সকলেরই উচিত অন্তর দিয়ে তাদেরকে ঘৃণা করা। নচেৎ আমরা ঈমানদারের কোন স্তরে পরবো না। সুতরাং যদি অন্তর দিয়ে ঘৃণা করতে পারি, তাহলে আমরা ঈমানের তৃতীয় নাম্বার স্তর তথা সর্বনিম্ন স্তরে থাকবো।
&&& এখন আমরা যাচাই করি, নির্ণয় করি,তুলনা করি আমার মাঝে কোন পর্যায়ের ঈমান আছে।
"আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এক নাম্বার ঈমানদার বানিয়ে দিন। (আমিন)
বি,দ্র, ইসলামি বিভাগে কেউ লেখা পাঠাতে চাইলে, নিন্মের Gmail এ পাঠান।
muftimohammadsharifulislam@gmail.com
নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার,ইমেল/ফেসবুক লিংক সহ পাঠালে লেখা প্রকাশ হলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ইনশাআল্লাহ।
@@ Facebook পেজ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।
https://tinyurl.com/ycpwjlso
No comments:
Post a Comment